বির (সমাজ কল্যাণ)
মুসলিম- অমুসলিম নির্বিশেষে মানবতার কল্যাণে কাজ করা এবং এই ধরনের কাজ যারা করছেন তাদেরকে সহযোগিতা করা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক, অর্থনেতিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা গঠনের মাধ্যমে কমিউনিটির উন্নয়নে ভূমিকা পালণ করা এবং সামাজিক স¤প্রীতি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালণ করা।
মানবতার কল্যাণে কাজ করা নেকীর কাজ
لَّيْسَ الْبِرَّ أَن تُوَلُّواْ وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ وَالْمَلآئِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ وَآتَى الْمَالَ عَلَى حُبِّهِ ذَوِي الْقُرْبَى وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ وَالسَّآئِلِينَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَالْمُوفُونَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَاهَدُواْ وَالصَّابِرِينَ فِي الْبَأْسَاء والضَّرَّاء وَحِينَ الْبَأْسِ أُولَئِكَ الَّذِينَ صَدَقُوا وَأُولَئِكَ هُمُ الْمُتَّقُونَ (১৭৭)
তোমরা পূর্ব কিংবা পশ্চিম দিকে মুখ ফিরালে তা কিন্তু পুণ্যের কাজ নয়। বরং প্রকৃত নেক কাজ হলো মানুষ ঈমান আনবে আল্লাহর প্রতি, পরকালের প্রতি, ফেরেশতাদের প্রতি, আল কিতাবের প্রতি, নবীদের প্রতি, আর আল্ল¬াহর সন্তুষ্ঠি লাভের আশায় অর্থ সম্পদ ব্যয় করবে আত্মীয়দের জন্য, ইয়াতীমদের জন্য, মিসকীনদের ও পথিকদের জন্য, সাহায্য প্রার্থীদের জন্যে এবং মানুষকে গোলামীর জিঞ্জির থেকে মুক্ত করার জন্য – (আল বাক্বারা ঃ১৭৭)মানুষের হক আদায় করা আল্লাহর নির্দেশ
আল্ল¬াহ তায়ালা মহাগ্রন্থ আল কুরআনে কিছু ব্যক্তির হক নির্ধারণ করে দিয়েছেন তাদের হক আদায় করা আবশ্যক। এই প্রসংগে আল্লাহ ইরশাদ করছেন:
يَسْأَلُونَكَ مَاذَا يُنفِقُونَ قُلْ مَا أَنفَقْتُم مِّنْ خَيْرٍ فَلِلْوَالِدَيْنِ وَالأَقْرَبِينَ وَالْيَتَامَى وَالْمَسَاكِينِ وَابْنِ السَّبِيلِ وَمَا تَفْعَلُواْ مِنْ خَيْرٍ فَإِنَّ اللّهَ بِهِ عَلِيمٌ (২১৫)
তোমার কাছে জিজ্ঞাসা করে তারা কি ব্যয় করবে? বলে দাও- যে বস্তুই তোমরা ব্যয় কর তা হবে পিতা-মাতার জন্য, আত্মীয় আপনজনদের জন্য, ইয়াতীম-অনাথদের জন্য, অসহায়দের জন্য এবং মুসাফিরদের জন্য। আর তোমরা যে কোন সৎ কাজ করবে নিসন্দেহে তা অত্যন্ত ভালভাবেই আল্লাহর জানা রয়েছে- (আল-বাক্বারাঃ ২১৫)
মিসকীন ও ইয়াতীমের ভরন পোষণের জন্য অর্থ ব্যয়ের কথা কুরআনের বিভিণœ জায়গায় এসেছে:
َيُطْعِمُونَ الطَّعَامَ عَلَى حُبِّهِ مِسْكِينًا وَيَتِيمًا وَأَسِيرًا (৮)
إِنَّمَا نُطْعِمُكُمْ لِوَجْهِ اللَّهِ لَا نُرِيدُ مِنكُمْ جَزَاءً وَلَا شُكُورًا (৯)
إِنَّا نَخَافُ مِن رَّبِّنَا يَوْمًا عَبُوسًا قَمْطَرِيرًا (১০)
فَوَقَاهُمُ اللَّهُ شَرَّ ذَلِكَ الْيَوْمِ وَلَقَّاهُمْ نَضْرَةً وَسُرُورًا (১১)
وَجَزَاهُم بِمَا صَبَرُوا جَنَّةً وَحَرِيرًا (১২)
(আর সৎ লোকেরা) আল¬াহর ভালবাসায় খাবার খাওয়ায় মিসকীন, ইয়াতীম এবং বন্দীদের, আর বলে: আমরা কেবল আল¬াহর সন্তুষ্টির জন্য তোমাদের আহার করাচ্ছি। তোমাদের কাছ থেকে কোন প্রকার বিনিময় বা কৃতজ্ঞতা লাভের আমরা আকাংখী নই-( আদ-দাহরঃ ৮-৯)।
ধনীদের সম্পদে বঞ্চিতদের হক রয়েছে
وَفِي أَمْوَالِهِمْ حَقٌّ لِّلسَّائِلِ وَالْمَحْرُومِ (১৯)
“এবং তাদের মালের মধ্যে ভিখারী ও বঞ্চিতদের অধিকার ছিলো।” (যারিয়াতঃ ১৯)
যারা অন্য মানুষের হক আদায় করেনা আল্লাহ তাদের ধিক্কার দিয়েছেন
وَيَمْنَعُونَ الْمَاعُونَ (৭)
“(এমনকি) সাধারণ ব্যবহারের জিনিসও অন্যকে দেয় না।” (মাউনঃ ৭)
ঋণ গ্রহীতাকে সাহায্যের কথা কুরআনে এসেছে
ঋণগ্রহীতার ঋণ পরিশোধের জন্য যাকাত দেয়া, সদকা করা বা করজে হাসানার কথাও কুরআনে এসেছে। এই প্রসংগে আল্লাহ বলেন:
وَإِن كَانَ ذُو عُسْرَةٍ فَنَظِرَةٌ إِلَى مَيْسَرَةٍ وَأَن تَصَدَّقُواْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ (২৮০)
ঋণগ্রহীতা যদি অত্যধিক অনটনে পীড়িত হয় তাহলে তার অবস্থা স্বচছল না হওয়া পর্যন্ত তাকে সুযোগ দাও; আর যদি তাকে মাফ করে দাও তাহলে তা হবে তোমাদের জন্য উত্তম। যদি তোমরা কিছু জ্ঞান রাখতে তাহলে এর কল্যাণকারিতা উপলব্ধি করতে- (আল বাকারাঃ ২৮০)।
মিসকীনকে খাবার না দেয়া জাহান্নামীদের অভ্যাস
إِنَّهُ كَانَ لَا يُؤْمِنُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ (৩৩) وَلَا يَحُضُّ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِينِ (৩৪)
“নিশ্চয়ই সে মহান আল্লাহর প্রতি ঈমান আনতো না। সে মিসকীনকে খাবার দেবার জন্য উৎসাহ দিতো না।” (হাক্কাহ ঃ ৩৩-৩৪)
হাদীস
عَنْ اَنَسٍ رضى وَعَنْ عَبْدِ اللهِ رضى قَالَ قَالَ رَسُوْلُ للهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اَلْخَلْقُ عَيَالُ اللهِ فَاَحَبُّ الْخَلْقِ اللهِ مَنْ اَحْسَنَ اِلى عَيَالِه (بيهقى)
আনাস ইব্ন মালেক (রা) ও আবদুল্লাহ্ ইব্ন মাসঊদ (রা) হতে বর্ণিত, তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেন, গোটা সৃষ্টিকূল আল্লাহ্র পরিবার। অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহ্র পরিবারের সাথে সদ্ব্যবহার করে সে আল্লাহ্র সর্বাধিক প্রিয় সৃষ্টি। (বায়হাকী)