এম সি এর মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হচ্ছে ইসলামের প্রচার ও প্রসার, মুসলমানদের পারস্পরিক ঐক্য ও স¤প্রীতি বৃদ্ধি এবং মানবতার কল্যাণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর মাধ্যমে আলাহর সন্তুষ্টি অর্জন। উপরিউক্ত উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এম সি এনিম্নলিখিত কাজ করতে চায়:
১. মুসলমানদের মধ্যে ইসলামী চেতনাবোধ জাগ্রত করা এবং বাস্তব জীবনে ইসলাম অনুশীলনের মাধ্যমে পাশ্চাত্যে সত্যের সাক্ষ্য হিসাবে নিজেদেরকে পেশ করা
২. ইসলাম সম্পর্কে অপপ্রচার, সন্দেহ ও সংশয় অপনোদনে ভূমিকা রাখা এবং সর্বশ্রেণীর মানুষের নিকট ইসলামের প্রকৃত রূপ তুলে ধরা
৩. ইসলামের আলোকে জীবন ঢেলে সাজানোর প্রতিজ্ঞা জ্ঞাপনকারীদেরকে সংগঠিত করা ও নৈতিক প্রশিক্ষণ দান
৪. কমিউনিটির উন্নয়ন, দু:স্থ মানবতার সেবা, মানবতার কল্যাণ ভূমিকা রাখা
৫. মুসলমানদের পারস্পরিক ঐক্য স্থাপনের চেষ্টা। কল্যানকর কাজে কমুনিটির সকলের সাথে একসাথে কাজ করা। সামাজিক উন্নয়ণ ও ন্যায়- ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখা।
এই কথা ঠিক যে সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য দ্বারাই কোন একদল লোক সংগঠিত হয়ে নেতৃত্বের অধীনে এক সাথে সুশৃংখলভাবে কাজ করতে অনুপ্রাণিত হয়। উদ্দেশ্য ও চিন্তার ঐক্যের কারণে ভৌগলিক দূরত্বে অবস্থানরত বিভিন্ন ব্যক্তি একই সংগঠনভুক্ত হয়। আবার উদ্দেশ্য ও চিন্তার মিল না থাকলে একই ঘরে অবস্থান করে একেকজন একেক ধরনের সংগঠন ও সংস্থার সাথে সম্পৃক্ত থাকে। তাই কোন একটি সংগঠনে সমবেত সকলের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা দরকার। কি উদ্দেশ্যে একটি ঘর নির্মান করা হয় তা জানা না থাকলে অথবা সে সম্পর্কে সকলের চিন্তার ঐক্য না থাকলে উক্ত ঘর অনাকংখিত ভাবে ব্যহার হতে পারে বা ব্যবহার নিয়ে নানা কথা- নানা মত সৃষ্টি হতে পারে; এমনকি ঘর ভেংগে ফেলার মত পরিবেশও সৃষ্টি হতে পারে।
পৃথিবীর যেসব দেশে ইকামতে দ্বীনের উদ্দেশ্যে ইসলামী আন্দোলনের কাজ পরিচালিত হচ্ছে তারা এমন একটি রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা চায় যেখানে:
১. মানুষ একমাত্র আলাহর দাসত্ব করবে; জীবনের সকল ক্ষেত্রে আলাহর বিধান মেনে চলবে। আলাহর আইনের ভিত্তিতেই ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র জীবনের সকল দিক পরিচালিত হবে এবং সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হবে।
২. মানুষ জীবনের সকল ক্ষেত্রে আলাহর রাসূল সালালাহু আলাইহি ওয়াসালামকে আদর্শ নেতা রূপে মেনে চলার সুযোগ পাবে।
৩. সৎ ও চরিত্রবান লোকেরা শাসন কর্তৃত্বের পরিচালক হবে এবং সমাজের সর্বত্র আদল তথা ন্যয় বিচার প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।
৪. রাষ্ট্র পরিচালিত হবে পরামর্শ ভিত্তিক। ক্ষমতাসীনরা স্বেচ্ছাচারী হবেননা।তারা মানুষের কল্যানে সদাসচেষ্ট থাকবেন।
অতীত ইতিহাস সাক্ষী যে মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ অনেক দেশেও এই ধরনের সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কিন্তু মুসলিম সংখ্যা লঘিষ্ট কিছু দেশের নাগরিকরা ইসলামের সামাজিক ন্যায়-নীতি ও ইনসাফের দৃষ্টান্ত দেখে আলাহর আইনের ভিত্তিতে সমাজ পরিচালনাকে স্বাগত জানিয়েছে। কোন দেশের অধিকাংশ জনগণ চাইলেই আলাহর আইনের ভিত্তিতে সমাজ পরিচালিত হতে পারে; জনগণ না চাইলে জোরপুর্বক ইসলাম প্রতিষ্ঠার কোন নজীর নেই।
জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহ র হুকুম মেনে চলতে হলে প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর হুকুম মেনে চলার পরিবেশ থাকতে হবে। আল্লাহ র দেয়া জীবন বিধান অনুযায়ী সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালিত না হলে জীবনের প্রতিটি স্তরে আল্লাহ র হুকুম মেনে চলা কঠিন। তাই আল্লাহ তাঁর রাসূলকে দ্বীনে হক বিজয়ের চেষ্টা প্রচেষ্টা করার দায়িত্ব দিয়েই দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে আল্লাহ ইরশাদ করছেন,
هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ (৯)
“তিনিই সে সত্তা, যিনি তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও হক দীন দিয়ে পাঠিয়েছেন যাতে তিনি একে আর সব দীনের উপর বিজয়ী করেন। মুশরিকদের নিকট এটা যতই অপছন্দ হোক না কেন” (সফ ঃ ৯)।
ইসলাম অন্য কোন ধর্মাবলম্বীর প্রতি বিদ্বেষ ভাব পোষণ করেনা। তাই সকল মত ও পথের মানুষদেরকে নিয়েই সমাজকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলতে হবে। সমাজে ন্যয় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পরবর্তী প্রজন্মকে আদর্শ মানুষ হিসাবে গড়ে তোলতে হবে। ড্রাগসহ সকল ধরনের খারাপ জিনিসগুলো থেকে সমাজকে মুক্ত রাখতে হবে। ন্যয় ও ইনসাফের নীতিমালার ভিত্তিতে সমাজ যেন পরিচালিত হয় এই জন্য সকলকেই ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করতে হবে।