কর্মপদ্ধতি বা কর্মকৌশল ছাড়া কোন সংগঠনই তার লক্ষ্য হাসিল করতে পারেনা। এই ক্ষেত্রে এই কথা মনে রাখা দরকার যে রাসূল (সঃ)-এর অনুসৃত নীতির আলোকেই ইসলামী সংগঠনের কর্মনীতি প্রণীত হয়। এর সাথে বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের ইতিহাসলব্ধ অভিজ্ঞতা কর্মনীতিকে বাস্তবসম্মত করতে সহায়ক। ইসলামী আন্দোলনের মৌলিক নীতিমালার আলোকেই কর্মপদ্ধতি রচিত হয়। এই ক্ষেত্রে স্থান, কাল, পাত্র, পরিবেশ ও পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ইসলামী সংগঠন সমূহের কর্মপদ্ধতির মাঝে পার্থক্য থাকাটা স্বাভাবিক। রাসূলে কারীম সালালাহু আলাইহি ওয়াসালামের মক্কী ও মাদানী জীবন যেমনি একধরনের ছিলনা তেমনি মুসলিম দেশ ও পাশ্চাত্যের পরিবেশ এক না হওয়ার ফলে কর্মনীতিতে কিছুটা পার্থ্যক্য থাকাটাই স্বাভাবিক।
এম সি এরকর্মনীতি হচ্ছে: কোন বিষয়ে সিদ্বান্ত গ্রহণ কিংবা কোন কর্মপন্থা গ্রহণের সময় আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ ও বিধানের প্রতি গুরুত্ব দেয়া। শরীয়াহ বিরোধী কোন কর্মনীতি গ্রহণ না করা। উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সততা ও বিশ্বাসপরায়ণতা পরিপন্থী কিংবা ফেতনা সৃষ্টিকারী কোন কর্মপন্থা গ্রহণ না করা। নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় দাওয়াত স¤প্রসারণ, সংগঠন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে লোকদের মন-মগজ ও চরিত্রের সংশোধন।
মূলত ইসলামী সংগঠন আর অন্যান্য সংগঠনের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য এখানেই। যে সংগঠনের সার্বিক কর্মকান্ড কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে পরিচালিত হয়না উক্ত সংগঠনকে ইসলামী সংগঠন বলা যায়না। আল্লাহ তায়ালা মহাগ্রন্থ আল-কুরআনকে মানুষের জীবন চলার নির্দেশিকা হিসাবে দান করেছেন। তিনি ইরশাদ করছেন,
الم (১) ذَلِكَ الْكِتَابُ لاَ رَيْبَ فِيْهِ هُدًى لِّلْمُتَّقِيْنَ (২)
“আলিফ, লা-ম, মীম এটি আল্লাহ র কিতাব। এতে কোন সন্দেহ নেই। ঐ মাত্তাকীদের জন্য হিদায়াত” (বাকারা ঃ ১,২)। কুরআন হচ্ছে মানুষের হিদায়েত ও সুস্পষ্ট পথ নির্দেশ। এই প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন,
شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِيَ أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَى وَالْفُرْقَانِ فَمَن شَهِدَ مِنكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِّنْ أَيَّامٍ أُخَرَ يُرِيدُ اللّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلاَ يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُواْ الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُواْ اللّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ (১৮৫)
“রমযান মাস হলো সেই মাস, যে মাসে কুরআন নাযিল করা হয়েছে; যা মানুষের জন্য পুরোটাই হিদায়ত, যা এমন স্পষ্ট উপদেশে পূর্ণ যে, তা সঠিক পথ দেখায় এবং হক ও বাতিলের পার্থক্য পরিষ্কারভাবে তুলে ধরে। তাই এখন থেকে যে ব্যক্তি হক ও বাতিলরে পার্থক্য পরিষ্কারভাবে তুলে ধরে। তাই এখন থেকে যে ব্যক্তি এ মাস পায় তার অবশ্য কর্তব্য যে, সে যেন পুরো মাস রোযা রাখে। আর যে অসুস্থ বা সফরে থাকে, সে যেন অন্য সময় ঐ দিনগুলোর রোযা করে নেয়। আল্লাহ তোমাদের জন্য যা সহজ তা-ই চান, যা কঠিন তা তিনি চান না। তোমাদেরকে এ জন্যই এ নিয়ম দেওয়া হয়েছে, যাতে তোমরা রোযার সংখ্যা পুরা করতে পারো, আর যে হিদায়াত আল্লাহ তোমাদেরকে দিয়েছেন এর জন্য তোমরা আল্লাহ র বড়ত্ব প্রকাশ করতে পারো এবং আল্লাহ র শুকরিয়া আদায় করতে পারো” (বাকারা ঃ ১৮৫)। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কুরআন অনুসরণ করলে মানুষ পথহারা হবেনা। এই প্রসঙ্গে আল্লাহ ইরশাদ করছেন,
قَالَ اهْبِطَا مِنْهَا جَمِيعًا بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ فَإِمَّا يَأْتِيَنَّكُم مِّنِّي هُدًى فَمَنِ اتَّبَعَ هُدَايَ فَلَا يَضِلُّ وَلَا يَشْقَى (১২৩)
“আল্লাহ বললেন, “তোমরা উভয়ই (মানুষ ও শয়তান) এখান থেকে নেমে যাও। তোমরা একে অপরের দুশমন। আমার পক্ষ থেকে যদি কোন হিদায়াত পৌঁছে তাহলে যে আমার হিদায়াত মেনে চলবে সে গোমরাহও হবে না, হতভাগাও হবে না- (তোয়াহা ঃ ১২৩)। বস্তুত আল-কুরআন মানুষের জন্য সুস্পষ্ট জীবন বিধানের নাম। এই প্রসঙ্গে আল্লাহ ইরশাদ করেন,
طس تِلْكَ آيَاتُ الْقُرْآنِ وَكِتَابٍ مُّبِينٍ (১) هُدًى وَبُشْرَى لِلْمُؤْمِنِينَ (২)
“তোয়া-সীন। এগুলো কুরআন ও এক সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত। এটা মুমীনদের জন্য হিদায়াত ও সুসংবাদ” (নমল ঃ ১, ২)। একজন ঈমানদার ব্যক্তিকে কুরআন ও সুন্নাহর নির্দেশনা মেনে চলতে হবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে। এই প্রসঙ্গে রাসূলে কারীম সালালাহু আলাইহি ওয়াসালাম ইরশাদ করেন,
عن مالك ابن انس رضي الله تعالي عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه وسلم تركت فيكم امرين لن تضلوا ما تمسكتم بهما كتاب الله وسنة رسوله
হযরত মালেক ইবন আনাস থেকে বর্ণিত যে রাসূলে কারীম সালালাহু আলাইহি ওয়াসালাম ইরশাদ করেন যে আমি তোমাদেও জন্য দুটো চিনিস রেখে যাচ্ছি , যতদিন তোমরা এদুটিকে আঁকড়িয়ে থাকবে ততদিন তোমরা পথ হারা হবেনা। একটি হচ্ছে আল্লাহ র কিতাব, আরেকটি হচ্ছে নবী পাকের সুন্নাহ (মুয়াত্তা ইমাম মালেক)। এই প্রসঙ্গে আরেকটি হাদীস রয়েছে,
عن جابر رضي الله تعالي عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه وسلم ان خير الحديث كتاب الله و خير الهدي هدي محمد صلي الله عليه وسلم- رواه مسلم
হযরত জাবির হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে কারীম সালালাহু আলাইহি ওয়াসালাম ইরশাদ করেন যে, সর্বোত্তম বাণী হচ্ছে আল্লাহ র কিতাব এবং সর্বোত্তম হিদায়েত হচ্ছে হযরত মুহাম্মদ (সা) এর হিদায়েত বা পথ প্রদর্শন- (সহীহ মুসলিম)। এই প্রসঙ্গে আরও একটি হাদীস প্রণিধানযোগ্য,
عن علي رضي الله تعالي عنه قال سمعت رسول الله صلي الله عليه وسلم يقول و هو حبل الله المتين- وهو الذكر الحكيم وهوالصراط المستقيم وهوالذي لاتزيغ به الاهواء ولاتلبس به الالسنة- ترمذي
হযরত আলী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রাসূলে কারীম সালালাহু আলাইহি ওয়াসালামকে বলতে শুনেছি, এটা হল (আল-কুরআন) আল্লাহ র মজবুত রশি, হিকমত ও প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশ ও সহজ সরল পথ। তা অনুসরণ করলে মানুষের চিন্তাধারা বিপথগামী হয়না এবং এমে যবানও আড়ষ্ট হয়না- (তিরমিযি)।
নিম্নে এম সি এরকতিপয় বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো:
১. এম সি এ এর পলিসি হচ্ছে কুরআন ও হাদিস অনুসরনের মাধ্যমে আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জন এবং এর নীতি হচ্ছে ইজতিহাদ অনুসরণ করা।
২. অন্যান্য সংগঠনে রাজনৈতিক প্রভাব, অর্থনৈতিক যোগ্যতা ও সামাজিক মর্যাদার ভিত্তিতে দলীয় পদ বণ্টন করা হয়। দলীয় নির্বাচনে পক্ষে-বিপক্ষে প্রচরণা হয়। অঞ্চলিকতা আত্মীয়তাসহ বিভিন্ন কারণে গ্র“পিং হয় কিন্তু ইসলামী সংগঠনে ঈমান, ইলম ও আমলের দিক দিয়া অগ্রসরদেরকেই গোপণ ব্যালটের মাধ্যমে নেতৃত্ব পদে নির্বাচিত করা হয়। ইসলামী সংগঠনের কোন পর্যায়ে নির্বাচনে পদপ্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই। নেতৃত্ব পদের জন্য পরোক্ষ চেষ্টাও অযোগ্যতার প্রমাণ বলে বিবেচিত হয়। নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের পদ দিয়ে ধরে রাখার নীতি ইসলামী সংগঠনে নেই।
৩. অন্যান্য সংগঠনে সাংগঠনিক তৎপরতা মাধ্যমেই কর্মী গঠন ও নেতৃত্ব বাছাই হয়। কিন্তু ইসলামী সংগঠনে সাংগঠনিক তৎপরতার সাথে ইসলামী আদর্শ অনুযায়ী মন-মগজ গঠন কতটুকু হয়েছে এই বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়।
৪. অন্যান্য সংগঠনে দলীয় বা ব্যক্তির সংশোধনের সুষ্ঠু ব্যবস্থা না থাকায় উপদল, কোন্দল ও গীবত চর্চা হয়। কিন্তু ইসলামী সংগঠনে সাংগঠনিক পদ্ধতিতেই সমালোচনা ও সংশোধনের সুযোগ রয়েছে।
৫. ইসলামী সংগঠন কোন ব্যক্তি বিশেষ কেন্দ্রীক পরিচালিত হয়না; ইসলামী সংগঠনে সামষ্টিক নেতৃত্বই ঐতিহ্য হিসাবে গরড় উঠেছে। কোন ব্যক্তি বা গ্র“পের ইচ্ছা বাস্তবায়নে দলীয় সিদ্বান্ত হয়না। পরামর্শ ভিত্তিক গ্রহীত সিদ্বান্তই সকলে অনুসরণ করে।
৬. ইসলামী সংগঠনে ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করার কেউ চেষ্টা করেনা। যদি কেউ ব্যক্তিগত কোন স্বার্থ সিদ্ধির জন্য আসেন তাহলে স্বাভাবিক পদ্ধতিতেই ছাটাই হয়ে যান।
৭. ইসলামী সংগঠনের দৃষ্টিভংগী ভারসাম্য পূর্ণ। এতে কোন ধরনের হঠকারীতা বা একগুঁয়েমীর স্থান নেই।
৮. এম সি এ মাজহাব ভিত্তিক সংগঠন নয়। এটি আহলি সুন্নাত ওয়াল জামা’আত অন্তর্ভুক্ত একটি সংগঠন এবং সকল মাজহাবের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আই এফ ইর সকল কর্মীরা কুরআন ও হাদীসের নীতিমালা অনুসরণ করে ইজতিাহদলব্ধ মাসয়ালায় বিভিন্ন মতের প্রতি সহনশীল। কেননা এই সংগঠন বিশেষ কোন মাজহাবকে প্রতিনিধিত্ব করেনা এবং করা উচিত মনে করেনা। সকল মাজহাবের ভাই-বোনদের জন্য দাওয়াতের স্বাগতিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায় এবং খূঁটি নাটি বিষয় নিয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি থেকে বিরত রাখতে চায়। ফোরাম ইউরোপের প্রেক্ষিতকে সামনে রেখে ফিক্হ সম্পর্কিত বিষয়াবলী সমম্বয় করতে চায়।
৯. এম সি এমুসলিম কমিউনিটির বহুদলীয় স্বকীয়তাকে স্বীকৃতি প্রদান করে এবং অনেক সংগঠনের সাথে অনেক বিষয়ে ভিন্ন মত থাকার পরও মুসলমান হিসেবে তাদের অধিকার প্রদান করে। সকল মুসলিম সংগঠনের সাথে গভীর সম্পর্ক রাখতে বিশ্বাসী এবং যোগাযোগ ও বিভিন্ন মতামতে আলোচনা সাপেক্ষে ও মতের অংশিদার হয়ে নিজেদের ব্যবধানকে হ্রাস করতে চায়। তবে এসব লক্ষ্য অর্জনের বাস্তব পথ ও পদ্ধতি নির্ধারণ নির্ভর করবে সংগঠনের কেন্দ্রীয় শু’রার উপর। তবে গভীর সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে সমমনা দলকে অগ্রাধিকার প্রদান ফোরামের লক্ষ্য। সুতরাং সহযোগীতা ও সমম্বয়ের মাধ্যমে মুসলমানদের মধ্যে অধিকতর ঐক্য প্রতিষ্ঠায় এম সি এসর্বদা প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে।
১০. বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ’র দায়িত্বের অংশ হিসেবে আইএফই বহিঃর্বিশ্বে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের সাথে নীবিড় সম্পর্ক অব্যহত রাখছে। তবে এই সম্পর্কের মাত্রা নির্ভর করে সময়, সম্পদ, লক্ষ্য ও কর্মসূচীর অভিন্নতা, জনশক্তির কর্মক্ষমতা এবং সৃষ্ট সম্পর্ক থেকে প্রাপ্ত স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী সুবিধাবলী ইত্যাদির উপর।
১১. ইসলামী সাহিত্যের ব্যবহার : সমৃদ্ধ সাহিত্য ভান্ডার ব্যবহারে আইএফই ঐসব জ্ঞানী-গুনিদের সাহিত্যকে অগ্রাধিকার প্রদান করে যাঁদের লিখনি ও কাজ ছিল অভিন্ন। যাঁরা লিখেন অথচ আমল করেননা তাঁদের একদিকে যেমন অভিজ্ঞতা কম তেমনি তাঁদের লেখনি অন্যদের উপর প্রভাব ফেলতে অপারগ। ফোরাম ঐসব বিজ্ঞ ব্যক্তিত্বদের লেখনিকে অগ্রাধিকার প্রদান করে যাঁরা আল্লাহ র রাস্তায় তাঁদের জীবন ও সম্পদ বাজি রেখেছেন অকাতরে। এসব অগ্রাধিকার লেখকদের সাহিত্য ভান্ডারের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
১২. মিডল পাথ: মিডল পথ বিষয়টি অনেক সময় মানুষকে দ্বিধায় ফেলে কারন ইসলাম ধর্মটাই হচ্ছে একটা মিডল পাথ। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে ফোরাম মধ্যম পন্থা অবলম্বন বেছে নিয়েছে যা হবে বিবাদ বহির্ভুত এবং বহু কালচার ও বহু ধর্মীয় সমাজে বসবাসে উপযোগী। সুতরাং কথা ও কাজে, সহনশীলতা প্রদর্শনে ও অন্যদের সাথে আলোচনার ক্ষেত্রে ইসলামের পরমত সহিষ্নুর মূল সৌন্দর্য্যকে উপহার দেয়া ও সুন্দর কমিউনিটি সম্পর্ক সৃষ্টি করা ফোরামের সাথে সম্পৃক্ত সকলের দায়িত্ব।
১৩. রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা: ইসলাম মানুষের জীবনকে তথাকথিত ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ভাগে দ্বিখন্ডন গ্রহন করেনা। রাজনীতির মত শিক্ষার জন্য অর্থনীতি ও সোসিয়েল ওয়েলফেয়ারসহ ইত্যাদি বিষয়গুলো আমাদেরকে আলোচনা করতে হবে । তবে আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক জীবন একটা মৌলিক দিক ও বিভাগ। বিষয়টি অত্যন্ত জটিল হওয়ায় অনেক সময় সাধারন মানুষ দ’ুটো বিষয়ের পার্থক্যতা নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়ে যায়। সুতরাং আইএফই’র লক্ষ্য হচ্ছে যে বিষয়টিকে যখন প্রয়োজন (জরুরিয়াত) তখন ভিত্তিতে এবং মুসলিম কমিউনিটির কল্যানকে (মাছলাহা) সামনে রেখে সমাধানের উদ্যোগ নেয়া ।
১৪. জেন্ডার সম্পর্কিত বিষয়াবলী: আমরা এমন এক সমাজে বাস করছি যেখানে জীব হিসেবে পুরুষ ও মহিলাদেরকে সত্যিকার অর্থে পার্থ্যক্য করা হয়না। আমরা এই সমাজে পুরুষের ও মহিলাদের সাথে তাই কাজ করি ও বাস করি একইভাবে। একারনে অনেকেই হয়ত চিন্তা করে যে ফোরামও সংগঠনের আভ্যন্তরীন পরিবেশে সম্ভবত অনুরুপ করে থাকে। এটি একটি ভ্রান্ত ধারনা। ফোরাম মনে করে যে তার জনশক্তির দায়িত্ব হচ্ছে সমাজে ধর্মীয় হায়া অনুশাসন ফিরিয়ে আনা ও আমাদের পরিবেশে তা কায়েম করা। এটিই মানবীয় সমাজের প্রাকৃতিক নিয়ম যা প্রকৃত অর্থে পাশ্চাত্যে আধুনিকতার নামে হনন করা হয়েছে। পারিবারিক পরিবেশে শরীয়াহকে পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা করা ও মেনে চলা ফোরামের অংগীকার। প্রয়োজনের (জরুরিয়াতের) তাগিদে সমঝোতা করা যেতে পারে তবে তা শুধু বাইরের পরিবেশে মাত্র।
১৫. ঐক্য : ইউরোপের সকল জাগ্রত মুসলমান এর লক্ষ্য যে আমরা যেন সকল মুসলমান ঐক্যবদ্ধ হয়ে দ্বীনের কাজ করতে পারি। এম সি এ ইউরোপে শক্তিশালী মুসলিম কমুনিটি গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছে।